

স্বামীকে খুন করা হয়েছে। স্ত্রী পুলিশকে জানাননি। তবে হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকে জানাতে হয় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি। এবং এর মধ্যে একটি অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল, একটি হত্যা এবং একটি পরিবারের দুঃখজনক গল্প আসে।
নিহতের নাম সুরুজ আলী। 31 বছর বয়সী। গত ১৯ জুন রাজধানীর কাফরুলে বর্ণমালা সড়কে তাকে খুন করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দেড় মাস আগে স্ত্রী বন্যা আক্তার ও দুই সন্তানকে নিয়ে জীবিকার সন্ধানে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন সুরুজ। লন্ড্রির দোকানে কাজ করতে এসেছিল। সেখানে সামান্য আয়ে সংসার চলছিল না। কিছু বাড়তি আয়ের আশায় শারিকি রাতে ঢাকায় যাত্রা বা রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল চালাতেন।
সুরুজ রাতে কেন মোটরসাইকেল চালাতো তার স্ত্রী পুলিশকে জানায়। পুলিশ জানিয়েছে, সুরজ যে মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল তার কোনো রেজিস্ট্রেশন ছিল না। দিনের বেলা গাড়ি চালালে ট্রাফিক পুলিশকে জরিমানা করতে হবে, তাই রাতে গাড়ি চালাতেন সুরজ।
রাজধানীর কাফরুলে ১৯ জুন রাতে ডাকাতদের গুলিতে গুরুতর আহত হন সুরুজ মিয়া। পুলিশ জানায়, চারজন তাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে পল্লবীর কালশীর বাসায় নিয়ে যায়। একজন মোটরসাইকেলটি সুরুজের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তার স্ত্রী সুরুজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২১ জুন মারা যান সুরজ।
পুলিশ জানায়, পুলিশ জানতে পারলে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেলটি আটক করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করায় সুরুজের স্ত্রী তার স্বামীকে হত্যার বিষয়টি থানায় জানায়নি। মোটরসাইকেলটি লন্ড্রি দোকানের মালিকের। এটি জব্দ করা হলে মোটরসাইকেলের মালিক চাপে পড়বে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
সুরুজের স্ত্রীও স্বামীকে উদ্ধারকারী চারজনকে বিষয়টি চাপা দিতে অনুরোধ করেন। তবে পুলিশের অনুমতি ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার স্ত্রীকে ঢাকার কাফরুল থানায় যেতে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।