
আদর করে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে জান্নাত। কিন্তু এই পৃথিবীতে তার জন্ম এক নারকীয় পরিবেশে; যেখানে মাতৃগর্ভ থেকে জন্মের পরপরই তাকে পলিথিনে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, তাকে মেরে ফেলার আগে ইট বা পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তাকে ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়েছে।
তার রক্তে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে এবং তার মারাত্মক নিউমোনিয়া হয়েছে। ডাক্তাররাও ভেবেছিলেন সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু না, জান্নাত বেঁচে আছে। বয়স চার মাস। যে শিশুটি চোখ খোলে, তার নাম ডাকলে হাসি পায়, হাসপাতালের সকলের কাছ থেকে ভালবাসা এবং সেবা পায়, তার জন্য একটি স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি করে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ডাস্টবিন থেকে নবজাতককে উদ্ধার করেছে একটি পরিবার। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জান্নাতকে গোসল করানোসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালন করছে। তিনি তার মায়াবী হাসি দিয়ে সবার মন জয় করেছেন। জান্নাত বড় হচ্ছে এবং এখন তার একটি মুগ্ধ পরিবার প্রয়োজন। আমরা জানি না জান্নাত ও তার মতো অসহায় শিশুরা সংসার পাবে কি না? নাকি সরকারী এতিমখানায় জীবন কাটবে। যাইহোক, আমি অনুভব করি যে প্রতিটি সন্তানের তাদের পিতামাতার ভালবাসা প্রয়োজন।
জান্নাতের জন্য বাবা-মায়ের যেমন একটি পরিবারের প্রয়োজন, তেমনি অনেক দম্পতির একটি সন্তানের প্রয়োজন। বিয়ের ১০ বছর পর ডাক্তার দম্পতি রাকিব ও শামীমা একটি অনাথ আশ্রম থেকে পাঁচ মাস বয়সী একটি কন্যাশিশুকে নিয়ে আসেন যখন তাদের কোলে কোনো সন্তান আসেনি।
পরিবারের কেউ প্রথমে এর বিরুদ্ধে ছিলেন না। কিন্তু দুজনেই দৃঢ়তার সাথে সমাজের মুখোমুখি হয়ে মেয়েটিকে ভালোবাসা দিয়ে বড় করে নিজের পায়ে দাঁড়ান। মেয়েটির নাম পুষ্প। তাকে পেয়ে রাকিব-শামীমার জীবন যেমন ভরে উঠেছে, তেমনি সুযোগ, সামাজিক পরিচয় ও ভালোবাসাও বদলে দিয়েছে মেয়েটির জীবন।